বিদআতকে যারা ভাগ করে তাদের যুক্তি প্রমাণ ও তার খণ্ডন :
বিদআতকে যারা ভাগ করে তাদের যুক্তি প্রমাণ ও তার খণ্ডন :
বিদআতীগণ নিজেদের নব উদ্ভাবিত বিদআতকে বৈধতা দেয়ার জন্য কিছু হাদীস ও কিছু উদাহরণ পেশ করে থাকে । আমরা এখানে সেগুলো উল্লেখ করে তার জবাব দেয়ার চেষ্টা করবো ।
বিদআতীদের প্রথম দলীল: ওমর (রা:) একবার সালাতে তারাবীহ সম্পর্কে বলেছিলেন : (কত না সুন্দর বেদআত এটি) বেদআতকে হাসানাহ ও সাইয়্যেআহ দ্বারা বিভক্তকারীদের নিকট ওমরের (রা:) এ উক্তিটি ব্যতীত তাদের মতের স্বপক্ষে আর কোন সহীহ দলিল নেই । খন্ডন: ওমর রা. এর বক্তব্যের উদ্দেশ্য বিদআতে শরয়ী নয়। বরং শাব্দিক অর্থে বিদআত বলেছেন। কেননা ইসলামী শরীয়তে বিদআত বলা হয় ১৮। ও দ্বীনের ভিতর এমন কিছু তৈরী করা যার কোনো ভিত্তি নেই।' দ্বীনের ভিতর বলার কারণে যে সকল নব আবিষ্কৃত কাজ পার্থিব জীবনের উন্নয়ণের জন্য তৈরী করা হয়েছে সেগুলো বিদআতের সংঙা থেকে খারিজ হয়ে গেছে। আর ভিত্তিহীন শব্দ দ্বারা যে সকল কাজের ভিত্তি আছে সেগুলো বিদআত থেকে খারিজ হয়ে গেছে। অর্থাৎ সেগুলো বিদআত নয়। তারাবীর সালাতের ভিত্তি আছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে তারাবী আদায় করেছেন । তার সাথে সাহাবীরা আদায় করেছেন। আর রাসূল (সা.) নিজে যে আমল করেছেন এবং তার পরবর্তীতে খোলাফায়ে রাশেদাগণ যে কাজ করেছেন তাকে কোনোক্রমেই ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় বিদআত বলা হয় না। ওমর (রা.) যে বিদআত বলেছেন সেটা সম্পূর্ণভাবে শাব্দিক অর্থের বিবেচনায় বলেছেন। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষা অনুযায়ী নয় । ইমাম আবূ শামা বলেন:
الله عنه: "تعمت البدعة هذه رواه البخاري في صحيحه من حديث عبـد الـرحمن وأما قول عمر رضي ا بن عبد القاري فالمراد بذلك البدعة اللغوية لا البدعة الشرعية؛ لأن عمر قال ذلك بمناسبة جمعه النـاس على إمام واحد في صلاة التراويح، وصلاة التراويح جماعة قد شرعها الرسول صلى الله عليه وسـلم ؛ حيث صلاها بأصحابه ليالي، ثم تخلف عنهم خشية أن تفـرض علـيـهـم انظـر: "صـحيح البخـاري" (২৫২/২) عمر على إمام واحد كما كان على عهد النبي صلى الله عليه وسلم في تلك الليالي التي صـلاها هـم فأحيا عمر تلك السنة، فيكون قد أعاد شيئا قد انقطع، فيعتير فعله هذا بدعة لغويـة لا شـرعية؛ لأن الله عليـه البدعة الشرعية محرمة، لا يمكن لعمر ولا لغيره أن يفعلها، وهم يعلمون تحذير الــي صـلى وسلم من البدع للفائدة: انظر: كتاب "الباعث على إنكار البدع والحوادث" لأبي شـامة (ص 25 ـ
ওমর (রা:) এর কথা এটি কতই না সুন্দর একটি বিদআত' দ্বারা কুরআন-হাদীস তথা ইসলামের পরিভাষায় যে বিদআত তা উদ্দেশ্য নয় । বরং এখানে শাব্দিক অর্থে বিদআত বলা হয়েছে। কেননা ইসলামের পরিভাষায় বিদআত বলা হয় 'ভিত্তিহীনভাবে সওয়াবের আশায় নবউদ্ভাবিত ইবাদতকে’ সুতরাং যে সকল বিষয়ের একটি শরয়ী ভিত্তি থাকবে যার দিকে প্রত্যাবর্তন করা যায়, সে গুলো সম্পর্কে যখন বিদআত বলে মন্তব্য করা হয় তখন শাব্দিক বেদআত বুঝতে হবে শরয়ী বিদআত নয়। আর সালাতে তারাবীহ তো রাসূলুল্লাহ্ (সা:) নিজেই সাহাবিদের নিয়ে পড়ে ছিলেন। শেষ দিকে এসে ফরজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তিনি তার থেকে পিছিয়ে গেছেন। তবে সাহাবারা বিক্ষিপ্ত ভাবে রাসূলের জীবদ্দশায় এবং ওফাতের পর ধারাবাহিক ভাবে পড়েছেন। এক পর্যায়ে এসে ওমর রা. সকলকে এক ইমামের পিছনে একত্রিত করে দিয়েছেন যেমন তারা রাসূলের পিছনে পড়ে ছিলেন । সুতরাং এটি দ্বীনের মধ্যে কোন নতুন বেদআত ছিল না। বরং একটি বিলুপ্ত সুন্নাতকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। কেননা শরিয়তের পরিভাষায় যাকে বিদআত বলা হয় তা তৈরী করা সম্পূর্ণরূপে হারাম । যা ওমর (রা:) বা অন্য কোন সাহাবীর পক্ষে তৈরী করা সম্ভব নয়। কেননা বিদআতের বিরূদ্ধে যে সকল সতর্কবাণী রাসূলুল্লাহ (সা:) করেছেন তা তাদের ভাল করেই জানা ছিল।' (আল বায়েস আলা ইনকারিল বিদায়ি ওয়াল হাওয়াদেস, পৃষ্ঠা ৯৫ )
বিদআতীদের দ্বিতীয় দলীল: বিদআতিরা নিজেদের বিদআতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আরেকটি হাদীস দিয়ে দলীল পেশ করার অপচেষ্টা করে থাকে। সেটি হলো:
عن المنذر بن جرير عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال من سن في الإسـلام من أجـور سنة حسنة كان له أجرها وأجر من عمل بها من بعده من غير أن ين
‘জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসলামে একটি ভাল সুন্নত চালু করলো, সে ওটার সওয়াব পাবে এবং পরবর্তীতে যারা তার উপর আমল করবে সে তাদের সাওয়াবও পাবে এবং আমলকারীদের তাতে কোন কমতি হবে না (সহীহ মুসলিম ২৩৯৮; সুনানে নাসায়ী ২৫৫৩; সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৩; মুসনাদে আহমদ ১৯১৫৬)
খন্ডন: বিদআতীদের এই হাদীস দিয়ে দলীল পেশ করা সঠিক নয়। কেননা এখানে বিদআতে হাসানা চালু করার কথা বলা হয় নাই। বরং সুন্নাতে হাসানা চালু করার কথা বলা হয়েছে। তাছাড়া এই হাদীসটি যেই প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে সেটি হলো একদল অসহায় সাহাবীদেরকে সাহায্য করার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা:) সাহাবায়ে কিরামদের নিকট আবেদন জানালেন। রাসূলুল্লাহ (সা:) এর আহবানে সাড়া দিয়ে প্রথমে একব্যক্তি কিছু সাহায্য করলো তাকে দেখা-দেখি অন্যান্য সাহাবায়ে কিরামগণও সাহায্য করতে লাগলেন এবং এক পর্যায়ে এই সাহায্যের পরিমান একটি বড় স্তুপে পরিণত হয়ে গেল । তখন রাসূলুল্লাহ (সা:) খুশি হয়ে উপরোক্ত হাদীসটি বলেন। সুতরাং এ হাদীসকে বিদআতে হাসানা প্রমান করার জন্য পেশ করা আরেকটি গোমরাহী । যেমন গোমরাহী খোদ বিদআতে হাসানা।
বিদআতীদের তৃতীয় দলীল: বিদআতিরা বিদআতে হাসানা প্রমান করার জন্য কিছু উদাহরণ পেশ করে থাকে। তারা বলে যে, এরূপ আরো অনেক নতুন নতুন বিষয়ের প্রবর্তন হয়েছিল কিন্তু সালাফের কেউ সেগুলোকে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যান করেননি, যেমন কুরআন মাজিদকে এক মাসহাফে একত্রিত করা, (যা রাসূলের যুগে ছিল না) হাদিস লেখা ও সংকলন করা এটিও রাসূল (সা:) নিজে করে যাননি, মাদরাসা ঘর তৈরী করা । খন্ডন: বিদআতীদের উপরোক্ত যুক্তি ও উদাহরণের জবাব দিতে গিয়ে ইমাম
আবু শামা বলেন:
أما ما ذكروه من بعض الأمثلة وأنها بدعة حسنة؛ مثل جمع القرآن ونسخ القرآن فهذه ليست بدعة، هذه كلها تابعة لكتابة القرآن، والقرآن كان يكتب ويجمع علـى عـهـد النبي صلى الله عليه وسلم ، وهذه متممات للمشروع الذي بدأه الرسـول صـلى الله
عليه وسلم ؛ فهي داخلة فيما شرعه
“তারা যে সকল উদাহরণ পেশ করে 'বিদআতে হাসানা' বলে দাবী করেছে । যেমন: কুরআনকে একই মাসহাফে জমা করা, কুরআনকে লিপিবদ্ধ করা, মাদরাসা ঘর তৈরী করা, হাদীস সংকলন করা ইত্যাদি এগুলোর কোনটিই বিদ নয় বরং এসব সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত । কেননা কুরআন জমা করা, কুরআনকে বিভিন্ন নুসখায় ছাপানো, এক মাসহাফে কোরআন শরীফ একত্রিত করারও শরিয়তের একটি ভিত্তি আছে। কারণ রাসূলুল্লাহ সা. নিজে কোরআন লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তাকারে ছিল পরে সাহাবায়ে কেরাম সংরক্ষণের নিমিত্তে সবগুলোকে এক মাসহাফে জমা করেছেন । এমনকি বিশিষ্ট কয়েকজন সাহাবীদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ কাজে নিয়োগ করেছিলেন। যাদেরকে ‘কাতেবে অহী' বা অহীর লিখক বলা হতো। এমনিভাবে হাদীস সংকলন করা এটিও কোন বিদআত নয় বরং সুন্নাতের অন্তর্ভূক্ত। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা:) এর যুগে হাদীস লেখার প্রমান আছে। রাসূল সা. কতিপয় সাহাবিকে অনুমতি প্রার্থনা করার পর কোন কোন হাদিস লেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তার জীবদ্দশায় কুরআনের সাথে গায়রে কুরআন মিশ্রিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাপক হারে লেখার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু তার ওফাতের পর উক্ত নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। কেননা তিনি জীবিত থাকা অবস্থায়ই কোরআন পূর্ণতা লাভ করে এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা পাকাপাকি ভাবে সম্পূর্ণ হয় । এরপর মুসলিমগণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে হাদীস সংকলনে হাত দেন।
كذلك ما قالوه من بناء المدارس، هذا كله في تعليم العلم، والله أمر يتعلـم العـلـم وإعداد العدة له، والرسول أمر بذلك؛ فهذا من توابع ما أمر الله به .
অনুরূপভাবে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা, লিল্লাহ বোর্ডিং চালু করা ইত্যাদিও কোন বিদআত নয়। কেননা এসব কিছুই ইলমে দ্বীন শিক্ষাদানের অন্তর্ভূক্ত আর ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেওয়া এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত করার নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহ্ (সুব:) ও রাসূলুল্লাহ (সা:) দান করেছেন। সুতরাং এসব কিছু আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (সা:) এর আদেশের অন্তর্ভূক্ত। বিদআতে হাসানা নয়। রাসূলুল্লাহ (সা:) যেখানে স্পষ্ট বলেছেন, 'সকল বিদআত-ই গোমরাহী'। সেখানে বিদআতকে হাসানা (ভাল বিদআত) আর সাইয়িয়্যা (মন্দ বিদআত) এই দুইভাগে ভাগ করে আল্লাহর রাসূল (সা:) এর বিরূদ্ধে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আল্লাহর রাসূল (সা:) এর উপরে কোন ব্যাপারে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করতে আল্লাহ (সুব:) নিষেধ করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে:
يا أيها الذين آمنوا لا تقدموا بين يدي الله ورسوله واتقوا الله إن الله سميع عليم
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রনী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা এবং সর্বজ্ঞ।' (সুরা হুজরাত ৪৯:১)
যারা বিদআতকে হাসানা ও সাইয়্যিআ এই দুই প্রকারে ভাগ করে তারা পরোক্ষভাবে রাসূলুল্লাহ (সা:) কে রিসালাতের দায়িত্ব পালনে খিয়ানতকারী বলে আখ্যায়িত করে। কেননা আল্লাহ (সুব:) পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন:
اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الإسلام دينا.
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম। আমার নেয়ামতকে তোমাদের উপর পূর্ণতা দিলাম আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা ৫:৩)
সুতরাং যে দ্বীনকে আল্লাহ্ (সুব:) স্বীয় রাসূলের মাধ্যমে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন তার ভিতরে নতুন কিছু সংযোজন করার অধিকার কারও নেই। যদি করা হয় তার অর্থ দাড়ায় এই যে, আল্লাহ (সুব:) যদিও দ্বীন পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা:) সেগুলো ঠিকমত পৌছান নাই। বিধায় কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে। বিদআতী আলেমগণ বিদআতে হাসান তৈরী করে সেই অংশ পূরণ করছেন। এটার বাস্তব উদাহরণ এরকম, মনে করুন! একজন এম. পি তার অধিনস্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়্যারম্যানদেরকে নির্দিষ্ট পরিমান গম, টাকা-পয়সা বরাদ্দ দিলেন জনগনের মাঝে তা বিতরন করার জন্য । পরবর্তীতে জনগনকে তিনি জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলেন জনগণ তা ঠিকমত পায়নি। তাহলে এখানে খেয়ানত করলো চেয়্যারম্যান । ঠিক তেমনিভাবে আল্লাহ (সুব:) একটি পরিপূর্ণ দ্বীন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:) কে দান করেছেন। বান্দার কাছে পৌছে দেয়ার জন্য । পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
يا أيها الرسول بلغ ما أنزل إليك من ربك وإن لم تفعل فما بلغت رسالته
‘হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌছে দাও আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌছালে না।' (সুরা মায়েদা ৫:৬৭)
কিন্তু এখন এক শ্রেণীর বান্দা মনে করে দ্বীন পরিপূর্ণ নয় কিছু নব উদ্ভাবিত ‘বিদআতে হাসানা' ইসলামের ভিতরে সংযোজন করার অবকাশ আছে। এর অর্থ দাড়ায়, রাসূলুল্লাহ (সা:) রিসালাতের দায়িত্ব আল্লাহর বান্দাদের নিকট ঠিকমত পৌছান নাই। অথচ এরকম ধারণা করা হারাম। এক শ্রেণীর বিদআতীরা আল্লাহর রাসূল (সা:) এর বিরূদ্ধে এরকম অভিযোগ তুলতে পারে, এ আশংকা থেকেই রাসূলুল্লাহ (সা:) বিদায় হজ্জের ভাষণের এক পর্যায়ে লাখো জনতাকে সাক্ষী রেখে প্রশ্ন করলেন: 'তোমাদেরকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। (আমি আমার দায়িত্ব ঠিকমত আদায় করলাম কিনা?) তখন তোমরা আমার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে) কি উত্তর দিবে?' সাহাবাগণ উত্তর দিলেন:
قالوا نشهد أنك قد بلغت وأديت ونصحت. فقال بإصبعه السبابة يرفعها إلى الـسماء
وينكنها إلى الناس « اللهم اشهد اللهم اشهد ». ثلاث مرات
‘হ্যা! আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি নিশ্চয় আপনি আল্লাহর দেওয়া রেসালাত আমাদের কাছে পৌছে দিয়েছেন। আল্লাহর দেয়া আমানত আপনি ঠিকমত আদায় করেছেন এবং উম্মতের জন্য কল্যাণ কামনা করেছেন। একথা শুনে তিনি শাহাদাৎ আঙ্গুলকে আসমানের দিকে উঠাচ্ছিলেন আবার লোকদের দিকে ইঙ্গীত করছিলেন আর বলছিলেন, 1 zi হে আল্লাহ তুমি সাক্ষ্য থাক! একথা তিনি তিনবার বললেন।' (সহীহ মুসলিম ৩০০৯)
এরপরই আল্লাহ্ (সুব:) সীল মোহর স্বরূপ উপরোক্ত আয়াতটি নাজিল করলেন, “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম । আমার নেয়ামতকে তোমাদের উপর পূর্ণতা দিলাম আর তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।' (সূরা মায়েদা ৫:৩) সুতরাং দিন পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে যারা বিদআতে হাসানা নামক ইবাদতকে ইসলামে ভিতরে ঢুকাতে চায় তারা মূলত: পরোক্ষভাবে রাসূলুল্লাহ (সা:) কে রিসালাতের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে খিয়ানতকারী হিসাবে আখ্যায়িত করছে। একারণেই ইমাম মালেক (রহ:) বলেছেন:
من ابتدع بدعة فيراها حسنة فقد زعم ان محمدا صلى الله عليه وسلم خان في الرسـالة
لان الله تعالى يقول اليوم اكملت لكم دينكم فما لم يكن يومنذ دينا فليس اليوم دينا
'যে ব্যক্তি কোন বিদআ'ত আবিস্কার করে আবার সেটাকে বিদআতে হাসানাহ বা ভালো বিদআ'ত মনে করে সে যেনো দাবী করলো যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রিসালাতের ভিতরে খিয়ানত করেছেন, কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ “আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম । সুতরাং যে সব কাজ তখন দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত ছিল না তা বর্তমানেও দ্বীন নয়।' (মুহাব্বাতুর রাসূল বাইনাল ইত্তিবায়ি ওয়াল ইবতিদায়ী' ১/২৮৪)

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন