রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনই দ্বীন ইসলামের বাস্তব নমুনা :

 

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনই দ্বীন ইসলামের বাস্তব নমুনা :

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনই দ্বীন ইসলামের বাস্তব নমুনা :

দ্বীন ইসলাম কতটা ব্যাপক তা শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাস্তব জীবন থেকেই পরিষ্কার বুঝা যায়। তিনি আল্লাহর রাসূল হিসেবেই সব কাজ করতেন। মসজিদে ইমামতি করার সময় তিনি যেমন রাসূল ছিলেন, মদীনার রাষ্ট্র পরিচালনার সময়ও তিনি রাসূল ছিলেন । যুদ্ধের ময়দানেও তিনি রাসূল ছিলেন। অর্থাৎ তিনি যত কাজ করেছেন ও যত কথা বলেছেন তা রাসূলুল্লাহ হিসেবেই করেছেন ও বলেছেন। ধর্মীয় বিষয়ে যেমন তিনি রাসূল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তেমনি ব্যবসা বাণিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, যুদ্ধনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রেও রাসূল হিসেবেই সবকিছু করেছেন। তাই রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোটা জীবনটাই আল্লাহর দ্বীন বা আল্লাহর আনুগত্যের মধ্যে শামিল। অর্থাৎ রাসূলের জীবন যতটা ব্যাপক দ্বীন ইসলামও ততটা ব্যাপক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বাবস্থায় পূর্ণরূপে মেনে চলাই মুসলিম জীবনের কর্তব্য। শুধু ধর্মীয় বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মেনে চললেই ইসলামী জীবন গড়ে উঠে না। সুতরাং যারা মুসলিম হবার দাবীদার হয়েও শুধুমাত্র ধর্মীয় জীবনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর্শ নেতা মেনে চলেন কিন্তু রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাসূলের বিপরীত নীতি ও চরিত্রের লোকদেরকে নেতা মানেন, তারা কালেমার বিপরীতেই কাজ করছেন। শুধু তাই নয় এ জাতীয় লোকেরা আল্লাহকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে মুনিব বা ইলাহ মানতেই রাজী নয় এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সব বিষয়ে নেতা মানতেও প্রস্তুত নয় ।


কতক লোক “ইসলামকে রাজনৈতিক ময়দানে টেনে আনার" বিরুদ্ধে কথা বলে। তারা ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের মতো কতক আচার অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্মই মনে করে। তারা আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর “১৪৪ ধারা” জারী করতে চায়, যাতে মসজিদের বাইরে আল্লাহ ও রাসূলকে মানতে না হয়। প্রকৃতপক্ষে তারা ইসলামকেই মানতে রাজী নয়, যদিও তাদের মধ্যে কেউ কেউ কিছু ধর্ম-কর্মও করে থাকে । কিন্তু ইসলামের ব্যাপকতা সম্পর্কে তাঁদের ধারণা নেই বা মানতে প্রস্তুত নয় । এ জাতীয় লোকদেরকে “ধর্মনিরপেক্ষ” বলা হয় ।


খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে, পাকা দ্বীনদার হিসেবে সমাজে পরিচিত এক শ্রেণীর লোকও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের মতো কথা বলে। তারা সালাত, সাওম, হজ্জ, যাকাত, তাসবীহ ও তেলাওয়াতের মাধ্যমে ইসলামের আনুগত্য করছেন । কিন্তু আইন-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, দেশ শাসন ইত্যাদির ব্যাপারেও আল্লাহর কুরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহকে মানার চেষ্টা করা প্রয়োজন, তা তারা মনেই করেন না। কারণ তারাও দ্বীনের ব্যাপকতা সম্পর্কে সজাগ নন । সে হিসেবে তাদেরকেও ধর্মনিরপেক্ষ বলা চলে। কারণ তারাও ইসলামকে। ধর্মীয় গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পক্ষপাতি। এসব ধার্মিক লোক ইসলামকে রাজনীতি বর্জিত ধর্ম মনে করে। তাঁদের নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিপূর্ণ ‘আদর্শ মানব' হলে তারা কিছুতেই এমন ভুল করতে পারতেন না।


রাজনৈতিক ময়দানে কারো পক্ষে নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব হয় না। প্রচলিত নির্বাচনে তো তারা কোন না কোন পক্ষকে সমর্থন করেই থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে কোন না কোন মতামত গ্রহণ করা ছাড়া উপায় থাকে না । যারা ধার্মিক হয়েও রাজনীতির ময়দানে ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতি করেন, ইসলামের পক্ষে কাজ করেন না; তাদের পক্ষে প্রচলিত নির্বাচনে এবং জাতীয় ইস্যুতে অধার্মিক রাজনৈতিক দলের খপ্পরে পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। এ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, একদল “ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিতে” বিশ্বাসী আর অন্যদল “রাজনীতি নিরপেক্ষ ধর্মে” বিশ্বাসী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আনীত দ্বীন ইসলামের দৃষ্টিতে উভয় দলই ভুল পথে আছেন। তবে রাজনীতি বলতে আমরা প্রচলিত গণতান্ত্রিক রাজনীতি বা অন্য কোন মানব রচিত পদ্ধতির রাজনীতির কথা বলছি না, যেখানে সাধারণ জনগনের ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচণ করে থাকে । রং কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশ মোতাবেক শুরা ভিত্তিক রাজনীতির কথা বলছি। যা বক্ষমান বইয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। ইনশা-আল্লাহ! 

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঈমান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

শবে বরাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

বিদআত থেকে সাবধান হতে করনীয়