শাবান মাসে যে বিদআত হয় সেগুলো কি কি?
শাবান মাস কেন্দ্রীক বিদআতঃ
অনেকের ধারণা শবে বরাতে যদিও কোনো বিশেষ ইবাদত কুরআন সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়, তা সত্ত্বেও করলে অসুবিধা কি? নিষেধ তো আর নেই । মূলত এটাই সকল বিদআতিদের দলীল। তারা জানে না, এভাবে ইবাদতের নামে বিদআত তৈরী করার কারণেই যুগে যুগে আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তণ করা হয়েছে। বর্তমানেও তাই হচ্ছে। শবে বরাতের গুরুত্ব দেয়ার কারণে ফরজ সালাতের গুরুত্ব নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি শবে বরাতের কারণে শবে কদরও ম্লান হয়ে যায় । শবে বরাতে রাতভর নফল সালাত আদায় করার পরে ফজরের সালাতে অংশগ্রহণ না করা অথবা ফজরের সালাতের পরে অন্যান্য সালাতে হাজির না হওয়া বিদআতের কুফলই বলতে হবে। কোনো কোনো মসজিদে শবে বরাতে সালাতুত তাসবীহ জামাতে আদায় করা হয়। অথচ রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কিরামদের নিয়ে এ সালাত কখনো জামাতে আদায় করেননি। কেউ হয়তো এখানেও বলবে রাসূলুল্লাহ (সা.) এটা না করলেও আমরা করলে অসুবিধা কি? অসুবিধা একটাই যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) এগুলো করেন নি। রাসূলুল্লাহ (সা.) যেগুলো করেন নি বা করতে বলেন নি তা যতভালো উদ্দেশ্যেই করা হোক না কেন অবশ্যই বিদআত ও গর্হিত কাজ। অনেকে আবার বিদআতকে হাসানা ও সায়্যিআহ দু'ভাগে ভাগ করে এবং বিদআতে হাসানা বা ভালো বিদআত নাজায়েজ নয় বলে ফাতওয়া প্রচার করে । তাদের উদ্দেশ্যে বলবো- যারা বিদআতে হাসানা নামক ইবাদতকে ইসলামের ভিতরে ঢুকাতে চায় তারা মূলত: পরোক্ষভাবে রাসূলুল্লাহ (সা:) কে রিসালাতের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে খিয়ানতকারী হিসাবে আখ্যায়িত করছে। একারণেই ইমাম মালেক (রহ:) বলেছেন:
من ابتدع بدعة فيراها حسنة فقد زعم ان محمدا صلى الله عليه وسلم خان في الرسـالة
لان الله تعالى يقول اليوم اكملت لكم دينكم فما لم يكن يومنذ دينا فليس اليوم دينا
'যে ব্যক্তি কোন বিদআ'ত আবিস্কার করে আবার সেটাকে বিদআ'তে হাসানাহ বা ভালো বিদআ'ত মনে করে সে যেনো দাবী করলো যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রিসালাতের ভিতরে খিয়ানত করেছেন, কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ "আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম। সুতরাং যে সব কাজ তখন দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত ছিল না তা বর্তমানেও দ্বীন নয়।' (মুহাব্বাতুর রাসূল বাইনাল ইত্তিবায়ি ওয়াল ইবতিদায়ী' ১/২৮৪)
মূলত যারা বিদআতে হাসানার নাম দিয়ে নতুন নতুন ইবাদত তৈরী করে তারা আল্লাহর নাজিলকৃত শরিয়তের পরিবর্তে নিজেদের মনগড়া একটি নতুন শরিয়ত প্রণয়ন করছে। এ ধরণের লোকদের প্রতিবাদ করে আল্লাহ্ (সুব.) ইরশাদ করেছেন:
أم لهم شركاء شرعوا لهم من الدين ما لم يأذن به الله ولولا كلمة الفصل لقضي بينهم
وإن الظالمين لهم عذاب أليم
তাদের জন্য কি এমন কিছু শরীক আছে, যারা তাদের জন্য দ্বীনের বিধান দিয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি? আর ফয়সালার ঘোষণা না থাকলে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েই যেত। আর নিশ্চয় যালিমদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। (সুরা শুরা: ২১)

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন