শাবান মাসে করণীয় ইবাদত গুলো কি কি?
শাবান মাসে করণীয় ইবাদতঃ
উপরের আলোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, কুরআন মাজীদ কিংবা সহীহ হাসীসে শবে বরাতে বিশেষ কোনো ইবাদতের উল্লেখ নেই । আমলের কিতাবসমূহে বর্ণিত নফল সালাতের নিয়ম ও বিশাল অংকের সওয়াব সম্বলিত হাদীসগুলো হয়তো জাল নয়তো জয়ীফ । দু একটি হাসান বা জয়ীফ হাদীসের ভিত্তিতে কোনো কোনো আলেম ব্যক্তিগতভাবে তাওবা-ইস্তেগফার করা, নফল সালাত আদায় করা, শেষরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা ও আইয়্যামে বীজের নফল সাওম পালন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। কেননা শাবান মাসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বেশী বেশী ইবাদত করতেন এবং উম্মতকেও উৎসাহিত করতেন । এ প্রসঙ্গে কয়েকটি হাদীস নিম্নে প্রদত্ত হলো:
الله عليه وسـلم --صلی رسول أن الله عن عمران بن حصين - رضی
قال له أو لآخر أصمت من سرر شعبان قال لا قال فإذا أفطرت فصم يومين
‘ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে অথবা অন্য কোনো সাহাবীকে বললেন, তুমি কি শাবানের মধ্যমভাগের সাওমগুলো পালন করেছো? লোকটি বললো না। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যখন রাখোনি তাহলে একদিন বা দুদিন সাওম পালন করো।' (মুসলিম ২৮০৮; বুখারী ১৯৮৩; আবু দাউদ ২৩৩০)
এই হাদীসে বর্ণিত শব্দটির অর্থ কেউ কেউ মাসের শেষভাগকে বুঝিয়েছেন। কেননা এ সময় চাঁদ পর্দাবৃত হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ মাসের মধ্যম অংশকে বুঝিয়েছে। আর এর দ্বারা উদ্দেশ্য 'আইয়্যামে বীজ' এর
শাবান মাসের ইবাদতের কয়েকটি হাদীস
শাবান মাস রামাদান মাসের আগমনী বার্তা বয়ে আনার মাস। তাই রামাদান মাসের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে শাবান মাসে বেশী বেশী ইবাদত করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: ا قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يـصوم حتـى عنها الله عن عائشة رضي
نقول لا يفطر ويفطر حتى نقول لا يصوم فما رأيت رسول الله صلى الله عليه وسـلم
إلا رمضان وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان
استكمل صيام شهر
‘আয়শা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাওম আদায় করতে থাকতেন আমরা বলতাম তিনি আর সাওম ছাড়বেন না। আবার তিনি সাওম ছাড়তে থাকতেন এমনকি আমরা বলতাম তিনি সাওম রাখবেন না। রামাদান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে রাসূলুল্লাহ (সা.) কে পূর্ণ মাস সাওম রাখতে আমরা দেখিনি । শাবান মাসে তিনি বেশী বেশী সাওম রাখতেন।' (বুখারী ১৯৬৯; মুসলিম ২৭৭৯; তিরমিজি ৭৩৯)
عنها حدثته قالت لم يكن النبي صلى الله عليه وسـلـم يـصوم الله رضي عن عائشة شهرا أكثر من شعبان فإنه كان يصوم شعبان كله وكان يقول خذوا من العمـل مـا تطيقون فإن الله لا يمل حتى تملوا وأحب الصلاة إلى النبي صلى الله عليه وسلم مـا
دووم عليه وإن قلت وكان إذا صلى صلاة داوم عليها
‘আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের থেকে বেশী কোনো মাসে সাওম রাখতেন না। শাবান মাস পুরোটাই তিনি সাওম রাখতেন । অবশ্য সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে তিনি বলতেন, তোমরা তোমাদের সাধ্যানুযায়ী আমল করো। কেননা আল্লাহ (সুব.) ততক্ষণ পর্যন্ত বিরক্ত হবেন না যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা বিরক্ত হও। আর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নিকট সবচেয়ে প্রিয় সালাত সেটাই যেটা স্থায়ী হয় যদিও তা পরিমানে কম হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও যখন কোনো সালাত শুরু করতেন তা স্থায়ীভাবে আমল করতেন।' (বুখারী ১৯৭১; মুসলিম ১৮৬৯; মুসনাদে আহমদ ২৪৫৪০ ) এ হাদীসে পুরো শাবান মাস সাওম রাখার কথা বলা হয়েছে। এটা হয়তো রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জন্য খাস আমল ছিলো নতুবা বেশীর ভাগ সময় সাওম রাখাকে পুরো সময় বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কেননা কোনো কোনো হাদীসে শাবান মাসের শেষভাগে সাধারণ লোকদের সাওম রাখতে নিষেধ করা হয়েছে । এ প্রসঙ্গে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:
عن أبي هريرة أن رسول الله -صلى الله عليه وسلم- قال « إذا التصف شعبان فلا تصوموا *
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন শাবান মাস অর্ধেক শেষ হয়ে যায় তোমরা সাওম রেখো না।' (আবু দাউদ ২৩৩৯; নাসায়ী কুবরা ৮২১৬)

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন